Tags: আহত, বগুড়া, শেরপুর, সংঘর্ষ
বগুড়ার শেরপুরে মসজিদের ইমাম পরিবর্তন করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১ দিকে জুম্মার নামাজের সময় উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দারুগ্রাম জামে মসজিদে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে গুরুতর দুইজনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
তারা হলেন- দারগ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে সাইদুল ইসলাম ও মজিবর রহমানের ছেলে আব্দুল হান্নান। এদিকে এই ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় আবারও ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাচ্চু বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈকত হোসেন ও সদস্য ফারুক হোসেন বলেন, বেশকিছুদিন ধরেই দারুগ্রাম জামে মসজিদের স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল করিম ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্তসহ শুক্রবারের দিন জুম্মার নামাজ পড়ান তিনি। তবে রমজানের তারাবির নামাজের জন্য নতুন ইমাম নিয়োগ দেওয়ার দাবি তুলেন মসজিদের মুসুল্লীরা। একপর্যায়ে মুসুল্লীদের দাবীর প্রেক্ষিতে তারাবির নামাজের জন্য ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এই ইমাম নিয়োগ দেওয়া নিয়ে দারুগ্রামের মানুষ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এমনকি আগের ইমাম আব্দুল করিমকে মসজিদের ইমামতি থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু আরেক পক্ষ (করিম হুজুরের সমর্থকরা) তার প্রতিবাদ করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
মসজিদ কমিটির ওই দুই নেতা আরও বলেন, উভয়পক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে জুম্মার নামাজের পর সমঝোতা বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু নামাজের জন্য মসজিদে এসেই দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাইদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মসজিদের ইমাম আব্দুল করিম হুজুর নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক সেই মুর্হুতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সর্জিত হয়ে ফেরদৌস, জামিল ও আরিফ তাদের লোকজন নিয়ে করিম হুজুরকে মারার জন্য এগিয়ে যায়। এসময় তিনিসহ উপস্থিত মসজিদের মুসুল্লীরা তাদের বাধা দিলে আমাদের বেধড়ক পেটায়। এতে আমিসহ আমার পক্ষের অন্তত দশজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
অভিযুক্ত জামিল আহম্মেদ মুসুল্লীদের ওপর হামলার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ইমাম পরিবর্তন করার জন্য একাধিকবার বলার পরও সেটি মানা হয়নি। জুম্মার নামাজের সময় সেই কথাটি আবারও বলা হয়। কিন্তু সাইদুলসহ কতিপয় ব্যক্তি বিষয়টি নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এতে তাদের চার থেকে পাঁচজন লোক আহত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাচ্চু বিশ্বাস বলেন, সংঘর্ষের পরপর থেকেই ঘটনাস্থলে অবস্থান করছি। বর্তমানে পরিস্থিত স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া এখনও কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।