Tags: বগুড়া, মিশ্র ফল চাষ, শেরপুর
“বাবাকে দেখেছি ফলবৃক্ষ রোপন করতে, গাছের পরিচর্যা করতে। তার সাথে সাথেই নিজের হাতে সে গাছের যত্ন নিয়েছি। সখের বসে দু একটি গাছ রোপন করেছিলাম। সে থেকেই বৃক্ষের প্রতি ভালোবাসা আজন্মকালের, কথাগুলো বলছিলেন বেলগাছি গ্রামের মিশ্র ফলচাষী মোঃ গাজিউল হক।
বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে সুঘাট ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী বেলগাছি গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে গাজিউল হক (৪৫) এবং তার স্ত্রী শাহানাজ পারভীন (৩৮) প্রায় ১২ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছেন মিশ্র ফলের বাগান। বাবার আদর্শ আর শাইখ সিরাজের “মাটি ও মানুষ” অনুষ্ঠানটি তাকে মুলত অনুপ্রাণিত করেছে বানিজ্যিকভাবে ফলজ বাগান করতে। লেবু এবং চায়না থ্রি লিচুর বাগানের মধ্য দিয়ে তার বানিজ্যিকভাবে ফল চাষ শুরু হলেও বেশিদিন টেকেনি তার লিচুর বাগান। হতাশাকে পরাজিত করে লিচু বাগান ভেঙে দিয়ে বগুড়া হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তার পরামর্শে প্রায় দেড় বছর আগে থেকে শুরু করেন মিশ্র ফলের বাগান যেখানে রয়েছে বারোমাসি আমসহ, মাল্টা, কুল, পেয়ারা, লেবু, কমলা আরও কত ফল।
বতর্মানে তার বাগানে বারোমাসি কাটিমন আম গাছের সংখ্যা ১০০ টি, ভিয়েতনামী বারোমাসি মাল্টা গাছ ৩০০টি, থাই সেভেন পেয়ারা গাছ ১০০০টি, গোল্ডেন এইট পেয়ারা গাছ ৪০০টি, বারোমাসি লেবু গাছ ১১০টি, শ খানেক কাশমেরী নুরানী আপেল কুলের গাছ রয়েছে। সবগুলো গাছই ফলে ভরপুর। এছাড়াও সুপারী গাছ রয়েছে ১৮০০টি যেগুলো ২/৩ বছরের মধ্যে ফল দেওয়া শুরু করবে।
সরেজমিনে পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে ঝুলছে বারোমাসি আম, পেয়ারা, লেবু, মালটা এবং কুল। বিক্রির অপেক্ষায় মাটিতে প্রস্তুত রয়েছে ৫/৬মন কুল। ফল বাগানের মালিক গাজিউল হকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাগান করতে যেয়ে এযাবৎ ছয় লাখ বা তারচেয়ে কিছু বেশি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এরই মধ্যে ৩০/৪০ হাজার টাকার ফল বিক্রিও করেছেন তিনি। পরিচর্যা ছাড়া তেমন কোনো বিনিয়োগ আর করতে হবে না।
বতর্মানে ৬জন শ্রমিক শুধুমাত্র গাছের পরিচর্যা, নিড়ানি, আগাছা দমন, কীটনাশক ছিটানো, পানি দেয়াসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকে। গাজিউল হক দম্পতি পালাকরে তার তদারকি করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা কোনো শত্রুতা না করলে বিশ থেকে পঁচিশ বছর সুফলভোগ করবেন বলে গাজিউল হক আশাবাদী।
তিনি আরো জানান, দুবার তিনি সরকারিভাবে বগুড়া হর্টিকালচার সেন্টারের মাধ্যমে প্রনোদনার অর্থ পেয়েছেন। এছাড়াও শেরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করে থাকেন।