Tags: প্রবাসের সংবাদ, মালদ্বীপ
বিদেশ মানেই সোনার হরিণ। এই কথাটি বেশ প্রচলিত বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে। কিন্তু এই সোনার হরিণের সন্ধানে কত জীবন হারিয়ে যাচ্ছে তা কি কেউ ভেবে দেখেছেন- না! দেশের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ প্রবাসী, এই প্রবাসী শব্দটি কেমন যেন এক অসহায় নাম, একজন প্রবাসীর প্রবাসে যাওয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছুই ভোগান্তি, হতাশা ও অসহায়ত্বের শিকলে আবদ্ধ। কিন্তু ক’জনই সেইসকল প্রবাসীদের দিনযাপনের খবর রাখে, ক’জনই বা জানতে চায় কেমন আছেন সবকিছু ছেড়ে জীবীকার তাগিদে বিদেশে পাড়ি জমানো মানুষটি। সবাই জানেন শুধু প্রবাসে যাওয়া মানুষটি যেন রক্ত-মাংসের বদলে টাকার মেশিনে প্রবর্তন। এমনই এক টাকার মেশিনের নাম মোঃ লিটন (পাসপোর্ট নং BE0210013)।
বিগত সাত বছর আগে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে মালদ্বীপে পাড়ি জমানো লিটন এখন পঙ্গুত্তে জীবন যাপন করছেন। স্থানীয় প্রবাসীদের সূত্রে জানাগেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কর্মস্থল থেকে কাজ শেষ করে মোবাইলে কথা বলা অবস্থায় পায়ে হেঁটে নিজ বাসায় ফিরছিলেন লিটন সহ আরো দুই বাংলাদেশী। কিছুদূর যাওয়ার পর পিছন থেকে একটি দ্রুত গতির কাবাড ব্যন তাদের চাপা দিলে গুরুত্বর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে মালদ্বীপের স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এদের মধ্যে লিটন এর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
গতকাল সন্ধায় রোড এক্সিডেন্টে দু-পায়ে গুরুতর আহত লিটনের চিকিৎসার জন্য মালদ্বীপস্থ প্রবাসী সোশ্যাল ওয়ার্কার এর সহায়তায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের কেশ টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে।অনুদান প্রদানে উপস্থিত প্রবাসীদের মধ্যে ফোর এল ইন্টারন্যাশনাল এর ম্যনাজিং ডিরেক্টর মোঃ হাদিউল ইসলাম, ঢাকা ট্রেডার্স এর প্রতিষ্ঠাতা মোঃ বাবুল হোসেন, প্রবাসী সোশ্যাল ওয়ার্কার এর সভাপতি জাকির হোসেন, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী জহিরুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আবু সালেম কুদ্দুস, প্রবাসী মিজানুর রহমান, প্রবাসী সাংবাদিক মোহাম্মদ মাহামুদুল হাসান (কালাম) ও মোঃ ওমর ফারুক অনিক, মদিনা জামাতের আহবায়ক মোহাম্মদ আল আমিন প্রমুখ।
রোড এক্সিডেন্টে আহত লিটনের দেশের বাড়ি টাংগাইলের ঘাটাইল উপজেলার সহর ঘপিনপুর ইউনিয়নের মোঃ আবদুল জব্বার এর পুত্র। লিটন গত সাত বছর যাবত অবৈধ কর্মী হিসেবে মালদ্বীপের বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে ডেইলি কাজে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তার দুটি পা এর মারাত্মক জখম এর কারনে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলার ক্ষমতা হারান সঙ্গে কর্মশক্তিও। আগামী রবিবার একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে পিরবেন বলে জানিয়েছেন সহ কর্মী।
উল্লেখ্য, গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার জনাব এস এম আবুল কালাম আজাদ রোড এক্সিডেন্টে গুরুতর আহত লিটন’কে দেখতে গেলেন হাসপাতালে এবং তার দুটি পা এর মারাত্মক জখম দেখে তাকে দ্রুত দেশে ফিরে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তাকে একটি বিমান টিকেট হস্তান্তর করেন। এ-সময় উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান জনাব মোঃ সোহেল পারভেজ। দূতাবাসের কল্যাণ সহকারী জনাব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।