Tags: কৃষিশ্রমিক, দিনাজপুর, ধান, ফুলবাড়ী
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দিগন্ত জোড়া ফসলি মাঠ সোনালি ধানের শীষে ভরে ওঠেছে। বোরো ধানের চারা রোপনের দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর পাকা ধান কাটার জন্য চাষিদের ব্যস্ততার যেন শেষ নেই। কিন্তু চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাব, ধান কাটার শ্রমিকের অভাব ও পারিশ্রমিক নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন চাষিরা। দিনব্যাপী বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ চাষি তাদের কষ্টে ফলনো সোনালি ধান এখনও ঘরে তুলতে পারেননি। এখন কারো ধান মাঠে, আবার কারো ধান বাড়ীর আঙিনায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিস্তৃর্ণ ফসলি মাঠের বোরো ধান পেকে গেছে। এখন সর্বত্রই চলছে ধান সংগ্রহের কাজ। বৃষ্টির ফলে অধিকাংশ কৃষক পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেননি। এ কারণে তড়িঘড়ি করে ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্ঠা করছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি ইরি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করেছেন কৃষকরা। শুরুতেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং তেমন রোগবালাই না থাকায় ধানের ফলনও ভাল হয়েছে। ধান কাটার শুরুতেই বিঘা প্রতি (৩৩ শতক) ২২ থেকে ২৬ মন ধান হয়েছে। গত কয়েক দিনের ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উঠতি আধা পাকা ধান একেবারে মাটিতে নুয়ে পরেছে।
উপজেলার চকচকা গ্রামের কৃষক বিষু সরকার বলেন, বাজারে ধান কাটার শ্রমিকের সংকটের ফলে একজন দিন মজুরকে এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকা হাজিরা দিতে হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে মাঠে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার বাধ্য হয়েই দ্বিগুণ মজুরি দিয়ে শ্রমিক নিতে হচ্ছে।
উপজেলার নূরমাহমুদ পুর গ্রামের কৃষক হেমন্ত চন্দ্র রায় বলেন, ৪ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। ইতোমধ্যে তার সব জমির ধান পেকে গেছে এবং বৃষ্টির কারণে জমিতেই ধান নষ্ট হচ্ছিল এ কারণে দ্বিগুণ মজুরি দিয়ে ধান কাটাই মাড়াই করতে হয়েছে।
উত্তর রঘুনাথপুর গ্রামের মহিদুল ইসলাম ডেইলি নববার্তাকে বলেন, বর্তমান বাজারে ধানের দাম ৭০০-৮০০ টাকা মণ। কিন্তু একজন শ্রমিকের মজুরি ১০০০-১১০০ টাকা। তিন বেলা খাবারসহ শ্রমিক প্রতি চাষিদের খরচ ১৩০০-১৪০০ টাকা। এক বিঘা জমির ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াইয়ে ৭ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ বিঘা প্রতি শ্রমিকের মজুরি খাদ্যসহ ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ হয়।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার ডেইলি নববার্তাকে বলেন, ঝড়োহাওয়াসহ ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ধানের শীষসহ গাছ ক্ষেতের মাটিতে নুয়ে পরেছে। তবে বর্তমানে শীষের ধান পাকা থাকায় তেমন ক্ষতি হবে না। তবে মজুর দিয়ে ধান কাটতে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে কৃষকদের। ইতোমধ্যে উপজেলা জুরে প্রায় ৫৫ ভাগেরও বেশি পরিমাণ ক্ষেতের ধান কর্তন করা হয়েছে। আগামী সপ্তারেহ মধ্যে ধান কর্তন শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। চলতি মৌসুমে বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে।