মার্কিন ডলারের পরিবর্তে চীনা ইউয়ানেও তেল বিক্রির কথা বিবেচনা করছে সৌদি আরব। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে রিয়াদ ও বেইজিংয়ের মধ্যকার আলাপ হয়েছে।
রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদির এই ভাবনা বাস্তবে রুপ পেলে আন্তর্জাতিক তহবিল মুদ্রা ডলার সংকটে পড়বে। এছাড়া অর্ধশতাব্দী ধরে বৈশ্বিক অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক ‘পেট্রোডলার’ ব্যবস্থাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।
চীন সৌদি আরব থেকে চাহিদা অনুযায়ী এক চতুর্থাংশ তেল কিনে থাকে। যদি ইউয়ানে সৌদি তেল বিক্রি করে তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে চীনা মুদ্রার স্ট্যাটাস সমৃদ্ধ হবে। বর্তমানে বিশ্বের ৮০ শতাংশ তেল ডলারে বিক্রি হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, ওয়াশিংটন রিয়াদকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার মাধ্যমে ১৯৭৪ সালের পর থেকে ডলারে তেল বিক্রি করছে সৌদি।
ইউয়ানে তেলের মূল্য পরিশোধ নিয়ে গত ছয় বছর ধরে চীন-সৌদি আলোচনা চলছিল। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় বাইডেন প্রশাসনের ওপর সৌদির অসন্তোষ বাড়ে। এর ফলে চীন-সৌদি আলোচনার নতুন মাত্রা পেয়েছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন ইয়েমেন যুদ্ধ থেকে বিরত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যা ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে উষ্ণহীন সম্পর্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্বের দেয়াল পড়ে সৌদির।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের পর পশ্চিমা অর্থনীতি রাশিয়াকে বৈশ্বিক আর্থিক দূরে রাখার চেষ্টায় ব্যস্ত। রাশিয়ার সঙ্গে চীনকেও নিষেধাজ্ঞার কালো তালিকায় ফেলার শঙ্কা তৈরি করেছে। সৌদি যদি তেল ইউয়ানে সফলভাবে বিক্রি করে, তাহলে এই পদক্ষেপ অনুকরণে চীনের অন্যান্য প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী অ্যাঙ্গোলা, ইরাক ও রাশিয়াও ইউয়ানে জ্বালানি বিক্রি করবে।
এর আগে ডলারে তেল বিক্রি করা থেকে দূরে সরে গেছে ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া ও ইরান। মার্কিন সামরিক বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে তারা ডলার থেকে সরে যায়। সবশেষ আফগানিস্তানে ওয়াশিংটনের গো-হারা ও সেইসঙ্গে তার অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সমস্যা দেখে এটা বলা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের আগের মতো শক্তি আর নেই।