জ্যৈষ্ঠের প্রচন্ড দাবদাহে অতিষ্ট সমগ্র দেশের মানবকূল ও পশুপ্রাণী। এসময় সবার প্রিয় ও একমাত্র নির্ভরযোগ্য পানীয় হচ্ছে ডাবের পানি। বারোমাসী ফল হলেও গ্রীষ্মকালেই নারকেলের ফলন বেশি হওয়ায় বাজারে সরবরাহও বেশি দেখা যায়। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ মৌসুমে ডাবের উৎপাদন বেশি হয়। এবার ডাব উৎপাদন বেশি হওয়ায় এই উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
খুচরা বিক্রেতা মিন্টু মিয়া ও সবুজ ফকির বলেন, আমরা ডাবের সাইজ অনুযায়ী প্রতিটি ডাব ৩০-৩৫ টাকা দরে কিনি। গাছে ওঠা ও সরবরাহের পরিশ্রম নিয়ে ৪৫ টাকা করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। পাইকাররা আমাদের কাছ থেকে ডাব কিনে ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়।
পাইকারী ক্রেতা সোহাগ সরদার বলেন, খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ৪৫ টাকা দরে ক্রয় করে ঢাকা, বরিশালসহ বড় বড় শহরের মোকামে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত পরিবহন খরচ ও চাঁদা দিয়ে প্রতিটি ডাবে ৫০ টাকারও বেশি খরচ পরে। আমাদের কাছ থেকে আবার খুচরা বিক্রেতারা ৫৫ টাকা দরে কিনে ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি করে।
তবে চাষীদের অভিযোগ, প্রান্তিক পর্যায়ের নারকেল চাষীদের কাছ থেকে মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত পেরিয়ে ক্রেতা পর্যন্ত পৌঁছাতে দাম অনেক হলেও মূলত প্রকৃতপক্ষে চাষীরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না।
আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, আগৈলঝাড়া উপজেলার ২৭০ হেক্টর জমিতে নারকেল চারা রোপণ করা হয়েছে। এতে কয়েক হাজার গাছ রয়েছে। যা অত্র এলাকার চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা যাবে।
স্থানীয় হাসপাতালের একজন পুষ্টিবিদ জানান, ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করতে এবং পানিশূণ্যতা রোধে ডাবের পানি অত্রন্ত কার্যকর পানীয়। একটি ডাবের পানিতে চারটি কলার সমান পটাশিয়াম আছে, আছে প্রাকৃতিক শর্করা। ফলে শরীরকে সতেজ করে এবং শক্তি দেয়। ডাবের পানি শরীরের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম রয়েছে ডাবের পানিতে, যা হাড়কে মজবুত করে। সেই সঙ্গে জোগায় ত্বক, চুল, নখ ও দাঁতের পুষ্টি। এছাড়া ডাবের পানি হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্যদূর করে। মোটামুটি সব ঋতুতে ডাবের পানির সমান কদর রয়েছে। তবে গরমে ডাবের কদর অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেড়ে যায়। পিপাসা মেটাতে, শরীরে তাত্ক্ষণিক শক্তির জোগান দিতে ডাবের পানি উত্তম পানীয়।
ডাবের পানির অন্যান্য পুষ্টিগুণের কথা উল্লেখ করে ওই পুাষ্টবিদ আরও বলেন, গরমের জন্য অনেকের ডায়রিয়া ও পানিশূণ্যতা হতে পারে। ডাবের পানি আমাদের শরীরের ডিহাইড্রেশন রোধ করে। আমাদের ঘামের সঙ্গে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ফ্লোরাইডসহ নানান খনিজ পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। একমাত্র ডাবের পানিই তা পূরণ করতে পারে।